Header Ads Widget

Responsive Advertisement

মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড: বাতাসে ছড়াচ্ছে বিষাক্ত গ্যাস, বাসিন্দাদের মাস্ক পরার পরামর্শ

 

মিরপুরে আগুন লাগা কেমিক্যাল গোডাউন থেকে এখনো বের হচ্ছে ধোঁয়ার মতো এক ধরনের গ্যাস। ছবি ভিডিও থেকে নেয়া


মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড: বাতাসে ছড়াচ্ছে বিষাক্ত গ্যাস, বাসিন্দাদের মাস্ক পরার পরামর্শ


আগুন লাগার ৪ দিন পরও রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে শিয়ালবাড়ি এলাকায় রাসায়নিক গুদাম ও তৈরি পোশাক কারখানা থেকে বের হচ্ছে ধোঁয়ার মতো এক ধরনের গ্যাস। যাকে হাউড্রোজেন সালফাইড বলছে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া সংস্থাগুলো।

ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করছে ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। বাতাসে বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি ও মান নির্ণয়ে গ্যাস ডিটেক্টর যন্ত্র ব্যবহার করে সংস্থা দুটি। এতে ধরা পড়ে উচ্চ মাত্রার হাউড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের উপস্থিতি। জায়গা ভেদে ৬০ থেকে ১৫০ পিপিএম পর্যন্ত হাইড্রোজেন সালফার পেয়েছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের গ্যাস ডিটেক্টর।
ঢাকা বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মাহমুদ উজ জামান বলেন, ‘গোডাউনের ভেতরে ও বাইরে উচ্চ মাত্রার হাউড্রোজেন সালফাইডের পাশাপাশি পাওয়া গেছে ক্ষতিকর কার্বন মনোক্সাইডও। এ বিষাক্ত গ্যাস মানুষের স্বাস্থ্য তথা জীবনের জন্য হুমকি।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘এটা সাধারণ কোনও আগুন নয়, কেমিক্যালের আগুন। আশপাশে অনেক বিষাক্ত উপাদান বাতাসে ছড়িয়ে আছে। অন্তত ১৫০ থেকে ৩০০ মিটার এলাকার মানুষকে সরিয়ে নেয়া উচিত। আর বাতাসের দিক যেদিকে যাচ্ছে, সেদিকে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা খালি রাখা ভালো।’
 
সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে থাকার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সংস্থাগুলো। এরপরও টনক নড়েনি বাসিন্দাদের। দু-একজন মাস্ক ব্যবহার করলেও বেশিরভাগই মাস্কবিহীন চলাফেরা করছেন।
 
এদিকে গুদামের ভেতরের পরিবেশ খুবই বিষাক্ত হওয়ায় সেখান থেকে রাসায়নিক দ্রব্য সরিয়ে নেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিস পয়োনিষ্কাশনের লাইন ব্যবহারসহ রাসায়নিক অপসারণের বিকল্প কৌশল নিয়ে ভাবছে।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ মহা ব্যবস্থাপক মো. মঞ্জুর রেজা জানান, বাতাস ও পানিতে মিশে থাকা এই গ্যাস শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ক্ষতিকর জেনেও গুদাম সরাতে রাজি নন বেশিরভাগ ব্যবসায়ী।
 
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, ‘এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সবার আগে প্রয়োজন আইনের প্রয়োগ। সিটি করপোরেশন, রাজউক, পুলিশ, পরিবশে অধিদফতর, বিস্ফোরক অধিদফতেরর যৌথ উদ্যোগে যথাযথভাবে আইনের প্রয়োগ হতে হবে।
 
এদিকে, স্বজনের খোঁজে প্রতিদিন গোডাউনের সামনের সড়কে ভিড় করছেন পরিবারের সদস্যরা। দীর্ঘ অপেক্ষায় ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে অনেকের। কেউবা জোর করে ভেতরে ঢুকতে তর্কে জড়াচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে।
 
গত মঙ্গলবার সকালে আবাসিক এলাকার মধ্যে গড়ে ওঠা ‘রূপনগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন’-এর গুদাম আলম ট্রেডার্স ও পাশের একটি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে পোশাক কারখানাটির ১৬ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ওই কারখানার আগুন নেভানো সম্ভব হলেও গত চার দিন রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামের আগুন পুরোপুরি নেভাতে বা জায়গাটি বিপদমুক্ত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
সূত্র : কালবেলা

Post a Comment

0 Comments