Header Ads Widget

Responsive Advertisement

পদ্মার ভাঙনে বিলীন স্কুল ভবন, বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম

 

পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে শরীয়তপুরের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি : কালবেলা


পদ্মার ভাঙনে বিলীন স্কুল ভবন, বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম


শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের একমাত্র প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে পুরো এলাকার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়টি রক্ষায় কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শতাধিক শিক্ষার্থী ঝরে পড়বে শিক্ষার আলো থেকে।

২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে ২০১৮ সাল থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশ ঘেঁষে বয়ে গেছে এক সময়ের খরস্রোতা পদ্মা নদী। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে।

২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি মারাত্মক ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়লে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। তবে চলতি বছরের জুন মাসে সেই জিওব্যাগ নদীতে তলিয়ে যায়। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভাঙনের আশঙ্কায় বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিদ্যালয় ভবনটি সম্পূর্ণ নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় চরম ব্যাঘাত ঘটেছে। আশপাশে অন্যকোনো বিদ্যালয় না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী নিকটবর্তী মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আল মামুন বলেন, বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভবন না থাকায় এখন পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, পদ্মার ভাঙন রোধে দ্রুত স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে শুধু বিদ্যালয় নয়, আশপাশের রাস্তা, হাটবাজার, গবাদিপশু ও শতাধিক বসতবাড়িও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মুহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে টেকসই বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।

শরীয়তপুরের সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অস্থায়ীভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়াও চলছে।

নদীভাঙনের কারণে শুধু একটি বিদ্যালয়ের ভবন নয়, ঝুঁকিতে পড়েছে শতাধিক শিশুর ভবিষ্যৎও। স্থানীয়দের প্রত্যাশা—দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যালয়টি পুনর্নির্মাণে উদ্যোগ নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সূত্র : কালবেলা

Post a Comment

0 Comments