Header Ads Widget

Responsive Advertisement

বায়ু দূষণেই বাড়ছে টাকের ঝুঁকি, বলছে গবেষণা

 


বায়ু দূষণেই বাড়ছে টাকের ঝুঁকি, বলছে গবেষণা


ব্যস্ত নগরজীবনের ঝলকানি ও উন্নত অবকাঠামোর আড়ালে লুকিয়ে আছে এক নীরব শত্রু, তা হচ্ছে বায়ুদূষণ। ধূলিকণা, ক্ষতিকর গ্যাস, সূক্ষ্ম কণা ও রাসায়নিক দূষণ শুধু আমাদের ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ডের নয়, ক্ষতিগ্রস্ত করছে ত্বক ও চুলকেও।

কয়েক বছর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় শুরু হওয়া এক গবেষণা থেকে জানা যায়, চুল পড়ার পেছনে বংশগত কারণ, হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ কিংবা পুষ্টির ঘাটতির পাশাপাশি। আমাদের চারপাশের বাতাসে ভেসে থাকা অদৃশ্য দূষণও চুলের গোড়া দুর্বল করে দিতে পারে। ফলে বাড়তে পরে চুল পড়া, দেখা দিতে পারে টাক। এই গবেষণা থেকে পাওয়া ফলাফল প্রথম প্রকাশ করা হয়, স্পেনের মাদ্রিদে অনুষ্ঠিত ২৮তম ইউরোপিয়ান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি অ্যান্ড ভেনেরোলজি কংগ্রেসে। গবেষণাটির ফলাফল উপস্থাপন করেন দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষক হিউক চুল কওক। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রসাধনী সংস্থার অর্থায়নে পরিচালিত এই গবেষণা চুল পড়া ও বাতাসে থাকা দূষকের সরাসরি সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়। গবেষণা এর কারণ ও সুরক্ষা বিষয়েও কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়।

দূষণে চুলের ক্ষয়: অদৃশ্য আঘাত

শহরের বাতাসে থাকা ক্ষুদ্র কণাগুলো মাথার ত্বকের রোমকূপ বন্ধ করে দেয়। ফলে চুলের গোড়ায় রক্ত ও পুষ্টির সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়, চুল ভঙ্গুর ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। দীর্ঘ মেয়াদে এর ফলাফল, অকাল চুল পড়া ও খুশকি। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি যখন এই দূষণের সঙ্গে মেশে, তখন ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়ে। চুলের প্রাকৃতিক রং ম্লান হয়, আর্দ্রতা হারিয়ে চুল শুষ্ক হয়ে যায়।

ঘরের ভেতরের দূষণও সমান ক্ষতিকর

কেবল বাইরের ধুলো-ধোঁয়াই নয়, ঘরের ভেতরের দূষণও মাথার ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। রান্নার ধোঁয়া, অপর্যাপ্ত বায়ু চলাচল বা দীর্ঘ সময় এয়ার কন্ডিশনারে থাকা। সবই মাথার ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ নষ্ট করে খুশকি ও চুলকানি বাড়ায়।


সুরক্ষার সহজ উপায়

পরিষ্কার রাখুন: প্রতিদিন নরম, ক্ল্যারিফাইং শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এটি দূষণ ও স্টাইলিং প্রোডাক্টের জমে থাকা স্তর দূর করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যত্ন: ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ স্কাল্প সিরাম ও কন্ডিশনার চুলের ভেতরের ক্ষত মেরামত করে ও ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি কমায়।

সানস্ক্রিন ব্যবহার: শুধু ত্বক নয়, চুলের জন্যও ইউভি প্রোটেকশন সমৃদ্ধ লিভ-ইন স্প্রে বা হেয়ার সেরাম ব্যবহার করুন।

খাবারের যত্ন: পালং শাক, বেরি, বাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড, মাছ, সবুজ চা। এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার চুলের গোড়া মজবুত করে। প্রচুর পানি পান করে শরীর ও মাথার ত্বক হাইড্রেট রাখুন।

প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সহায়তা

বর্তমানে বাজারে এসেছে ‘অ্যান্টি-পলিউশন’ স্কিন ও হেয়ারকেয়ার পণ্য। যেগুলো চুল ও ত্বকে সুরক্ষার স্তর তৈরি করে। যদিও এগুলো দূষণ পুরোপুরি ঠেকাতে পারে না, তবে নিয়মিত ব্যবহারে ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব।

নগরের ধুলো-ধোঁয়া এড়ানো কঠিন, কিন্তু সচেতন অভ্যাস ও নিয়মিত যত্ন চুল ও মাথার ত্বককে রক্ষা করতে পারে। নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হলেই দূষণের এই নীরব আক্রমণ থেকে চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

সূত্র: হাল ফ্যাশন

ছবি: এআই জেনারেটেড (হিরো ইমেজ) ও ইনস্টাগ্রাম

Post a Comment

0 Comments