কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে চান ভিপি
প্রার্থী তাসিন খান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ৬৩ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাহসিন খান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিউটের ২০২০-২১ সেশনের এ শিক্ষার্থী ও সাবেক সমন্বয়ক অরাজনৈতিক প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সংরক্ষণই এ প্যানেলের লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
তাসিন খান বলেন, লেজুড়বৃত্তিক রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একটি ইনক্লুসিভ প্যানেল থেকে নির্বাচন করছি। আমাদের লক্ষ্য ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করা।
এক্ষেত্রে আমি নির্বাচিত হলে শতভাগ আবাসন নিশ্চিতে কার্যকরী পদক্ষেপ, কোয়ালিটি এডুকেশন, খাবার গুণগত মান নিশ্চিত এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে সমন্বয় সাধনে সর্বাত্মক কাজ করবো।
জানা গেছে, ১৯৬৪-৮৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি রাকসু নির্বাচন হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে নারী প্রার্থীর নেতৃত্বে কোনো প্যানেল হয়নি। এ পদে কোনো ছাত্রী প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেননি।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে নির্বাচনের মনোনয়ন বিতরণ। এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সংসদ, হল সংসদ ও সিনেট সদস্য পদে মনোনয়ন তুলেছেন প্রায় ৫৬৫ জন পদপ্রার্থী। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ৮ জন মনোনয়ন তুলেছেন।
সচেতন শিক্ষার্থী প্যানেল নামে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। প্যানেল ঘোষণা ছাড়াই ২৫ পদে ছাত্রদল, ৩৮ পদে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট ও সমন্বয়করা বিভিন্ন পদে মনোনয়ন তুলেছেন। প্যানেল ঘোষণা করে ৩১ আগস্ট মনোনয়ন তোলার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রশিবির।
ব্যক্তিগত টাইমলাইনে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে তাসিন খান লেখেন, ‘আমরা রক্তক্ষয়ী জুলাইয়ের সাক্ষী হয়েছিলাম। আন্দোলনের সময় যখন আবাসিক হলগুলো বন্ধ করে সকল শিক্ষার্থীদের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়, সেই সংকটকালে আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক পরিষদে যুক্ত হই। আমি তখন নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিয়েছিলাম যে হয়তো আর কখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা হবে না। বেঁচে থাকলেও পরবর্তী জীবন হয়তো জেলে না হয় পলাতক হয়ে কাটাতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, ৫ আগস্ট পরবর্তী এই জীবনে আমি আমার বোনাস আয়ু পার করছি।’
তিনি আরো লেখেন, ‘এই বোনাস সময়ে আমার কিছু হারানোর ভয় বা প্রাপ্তির লোভ নাই। জুলাই আমাকে বিবেকের গুরুত্ব খুব ভালোই উপলব্ধি করিয়েছে। সামনে একাধিক সুযোগ আসার পরেও আমি কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়াকে শ্রেয় মনে করিনি। তবে আমি বরাবরই রাজনীতি সচেতন ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চাই এবং দলান্ধতাকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করি।’
তাসিন খান তার পোস্টে আরো লিখেন, ‘রাকসু একটি ঐতিহাসিক সুযোগ আমাদের কাছে। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করেই আমি আমার দক্ষতার জায়গা থেকে কিছু পরিকল্পনা সমেত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। এটা আমার কাছে অনেক বড় বিষয়। কারণ আমার কোনো দলীয় সাপোর্ট, ফান্ডিং বা কর্মী বাহিনী নাই। এই প্রেক্ষিতে শুধু একজন নারী প্রার্থী হিসেবেই নয় বরং একজন ভোটার হিসেবে অসংখ্যবার সাইবার নিরাপত্তাসহ সার্বিক নিরাপত্তা আশঙ্কার কথা প্রশাসনের কাছে বলার পরেও তারা এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সকল ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে আগাচ্ছি। বাকিটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।’
প্রার্থিতা ঘোষণা করে তিনি লেখেন, ‘আমি চাই এমন একটি রাকসু, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক বহুত্ব, এবং মানবিক মূল্যবোধের চর্চা হবে প্রতিদিনের বাস্তবতা। দীর্ঘদিন ধরে অচল থাকা এই প্লাটফর্মকে সক্রিয় ও কার্যকর করার লক্ষ্যে আমি আসন্ন রাকসু নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করছি।’
- সুত্র: parbattanews
0 Comments